মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন
যশোর প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক এমএ সালামের টাকা চুরির ভিডিও এক বছর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। চৌগাছা বাজারের ‘ধনী প্লাজা’ মার্কেটের জাহিদ ইলেকট্রনিক্স নামে একটি দোকানের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) ফুটেজে চুরির দৃশ্য ধরা পড়েছে।
সোমবার (১৪ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যদিও জাহিদ ইলেকট্রনিক্সের সত্ত্বাধিকারী মো. জাহিদ দাবি করেছেন, ভাইরাল ভিডিওটি এক বছর আগের। তিনি এটি ফাঁস করেননি।
এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকেলে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ সালামের ব্যক্তিগত ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি। ফলে প্রতিবেদনে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভাইরাল হওয়ায় সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এম এ সালাম ওরফে সালাম ধনী তার পরিবারের মালিকাধীন ‘ধনী প্লাজা’ মার্কেটের জাহিদ ইলেকট্রনিক্স নামে একটি দোকানের এসে দাঁড়িয়ে তার মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে দোকানের ক্যাশে বসে থাকা কর্মচারীকে কিছু কিনে আনতে বলেন। সে বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কয়েকবার সিসিটিভি মনিটরের দিকে তাকিয়ে কিছু দেখছেন। এরপরই সামনের টেবিলের উপর থেকে নিচু হয়ে ক্যাশ ড্রয়ার থেকে কিছু তুলে নিয়ে প্রথমে বাম হাতে রাখেন। পরে সেটি শার্টের বুক পকেটে ঢুকাচ্ছেন।’
জানা যায়, চৌগাছা উপজেলা বিএনপি দুইভাগে বিভক্ত। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক-২ এমএ সালাম। তিনি চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সহ-সভাপতি ও চৌগাছা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও চৌগাছা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।
জাহিদ ইলেকট্রনিক্সের স্বত্বাধিকারী মো. জাহিদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় এক বছর আগের হলেও চুরির ঘটনা নতুন নয়। এই চুরির আগেও তিনি (এমএ সালাম) অনেকবার এভাবে টাকা নিয়েছেন। সেদিন তিনি ক্যাশ থেকে দুইশ টাকা নিয়েছিলেন। তার (এমএ সালাম) মার্কেটেই দোকান ভাড়া নিয়ে আমি ব্যবসা করি। কাজেই কোনো প্রকার বিচারের আশা করলে ব্যবসার জায়গাটা হারিয়ে ফেলতে পারি।
মো. জাহিদ আরও জানান, ভিডিওটি ফাঁসের সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত নই। এ বিষয়ে আমি তখনও থানায় কোনো অভিযোগ করিনি। আমি ভিডিওটি ফাঁস করলে তখনই করতে পারতাম।
তবে ওই মার্কেটের কয়েকজন বলেছেন, ভিডিওটি সিসিটিভির আসল ফুটেজ নয়। বিষয়টি নিয়ে তখন এমএ সালামের বড় ভাই এমএ সামাদের নেতৃত্বে বিচার হয়েছিল। তখন ফুটেজ দেখার সময় কেউ মোবাইল ফেনে ভিডিও করে রাখে। সেটিই সোমবার ভাইরাল করা হয়েছে।
এ বিষয়ে যশোর জেলা ও চৌগাছা উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা বলেছেন, আমরা স্তম্ভিত, বিব্রত। এটা তার (এমএ সালাম) স্বভাব দোষ।
চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।